চুঁয়া ঢেকুর || Eructation
খুব খিদে পেয়েছিল আমার
পেট জ্বলছিল আমার
মাথা ঘুরছিল বন্ বন্ করে,
কাতর স্বরে মাকে বলেছিলাম --
মা একটু কিছু খেতে দাও
আর তো পারি নে।
ঘরে এক টুকরো খাবারও ছিল না,
আমার হতভাগিনী মা
অন্ধকার ঘরের এক কোণে বসে
চুপি চুপি ভেজা চোখ মুছছিলেন আঁচলে।
বাবা ছেড়া ফতুয়া গায়ে চাপিয়ে
বেড়িয়ে পড়লেন খাদ্যের অন্বেষণে ;
অনেক যোজন পথ অতিক্রম করে
অনেকের দুয়ারে হন্যে হয়ে ঘুরে ঘুরে
এক ঘট চরণামৃত আর ইফতারের
একমুঠো ভেজা ছোলা নিয়ে
বাড়ি ফিরলেন সন্ধ্যে পেরিয়ে।
এগুলো খেয়ে নে বাবা,
পেটের জ্বালা একেবারে কমে যাবে --
বলে তুলে দিলেন আমার শুকনো মুখে ;
পেটের আগুন নিভেছিল কী না
জানি না --
তবে বুভুক্ষু পেটে ক্লান্তি আর অবসাদে
বুজে এসেছিল চোখ।
পরদিন সকাল থেকেই
চুঁয়া ঢেকুর উঠে চলল অবিরাম --
হর হর মহাদেব -- আল্লা হো আকবর।
চরণামৃত আর ছোলার সেই চুঁয়া ঢেকুর
এখনও অবিরাম উঠে চলেছে
আমার বুভুক্ষু উদর থেকে
আমার বিভেদকামী হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে
ইবলিস্ মস্তিষ্কের গভীর প্রকোষ্ঠ থেকে --
হর হর মহাদেব
আল্লা হো আকবর!
আজ আমার বাড়ির সামনের রাস্তায়
বয়ে চলে ভ্রাতৃঘাতী রক্তস্রোত,
ধর্মের এঁটুলি কাদায় পিচ্ছিল
আমার ঘরের আঙিনা।।
--- প্রশান্ত পাইন
দম্ দম্
Comments