নাট্যকলা || dramaturgy
স্কুল লাইফ থেকেই আমার সহপাঠীরা
আমায় জানে নাট্যমোদী হিসাবেই,
অফিসের সহকর্মীরাও জানত
আমি চূড়ান্ত পর্যায়ের নাটক পাগল একটি মানুষ,
আমার নিজেরও ধারণা ছিল
আমি সত্যিই বিশাল নাট্যপ্রেমিক --
নাটকের জন্য আমি পারি না
এমন কোন কাজই নেই পৃথিবীতে।
নিজেও অভিনয় করতাম একটু আধটু
এবং মোটামুটি সুনামও ছিল ;
তবে নিজে অভিনয় করার চাইতে
অভিনয় দেখতে বা নাটক দেখতেই
বেশী ভাল লাগত আমার।
কিন্তু হঠাৎই কি হল কে জানে --
এখন আর নাটক দেখতেই ইচ্ছে করে না,
বড্ড বিরক্ত লাগে ;
কেমন যেন ক্লাউন মনে হয়
মঞ্চের উপর রঙমাখা মুখগুলিকে!
বিগত কয়েক বছর ধরে
রাজনীতির রঙ্গমঞ্চের নটনটীদের
এত অভিনয় দেখেছি
এবং এখনও দেখে চলেছি
তাতে নাটকের ব্যাপারে বিতৃষ্ণ হয়ে গেছি।
রাজনীতির নটনটীদের অজস্র ধন্যবাদ
তারা অন্তত নাটকের ভূতটাকে
আমার ঘাড় থেকে নামাতে পেরেছেন ;
সেই কবে এক ক্ষ্যাপাটে সাধু
মুখ ফস্কে বলে ফেললেন--
থ্যাটারে নোকশিক্ষে হয়,
ব্যস্ লোকশিক্ষার নেশায় ধরল আমায়।
কি যে লোকশিক্ষা হল জানি না,
তবে এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি যে
লোকশিক্ষা না হলেও
কুশিক্ষাটা বেশ ভালমতই হয়।
সাত সাতটা বছর ধরে
রাম-রাবণের যুদ্ধের অভিনয় দেখে
লোক সত্যিই খুব শিক্ষিত এখন ;
যুদ্ধের প্রাণবন্ত অভিনয়ে আমরা
এতটাই মোহিত যে --
মঞ্চের যুদ্ধশেষে সাজঘরে গলাগলি বসে
রাম-রাবণের একই বিড়িতে টান দেওয়াও
চোখে পড়ে না আমাদের।
এদের প্রাত্যাহিক নাটুকেপনা
অবিশ্রান্ত খেঁউর খিস্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে
আমরা দলাদলি করি -- তর্কাতর্কি করি
হানাহানিতে মাতি মহোল্লাসে,
নিজেরাই নিজেদের ক্ষয় করি ;
ওদিকে তখন রাম পরচুলো খুলে
রাবণ ন'টা মাথার ভার নিজের ঘাড় থেকে নামিয়ে
অধিকারীর থেকে পাওনাগন্ডা বুঝে নিয়ে
এগিয়ে চলে শুঁড়িখানার দিকে।
বাহা রে নাট্যকলা!
বাহারে অভিনয় শৈলী!!
--- প্রশান্ত পাইন
দম্ দম্
Comments